মোটা হওয়ার উপায় হলে যেমন নিজের কাছে অস্বস্তি লাগে, তেমনি অতিরিক্ত চিকন হলেও দেখতে বেমামান লাগে। অনেকেই আছে যারা মোটা হতে অনেক কিছুই ট্রাই করে থাকেন কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই কোন উপকার পাচ্ছেন না। বয়স আর উচ্চতার তুলনায় ওজন কম হওয়া বা আন্ডারওয়েট হওয়া কিন্তু খুবই সমস্যার ব্যাপার। তাই আজকে আমরা আপনাদের জানাবো মোটা হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে,
মোটা হওয়ার সহজ উপায়/টিপস
. ব্যায়াম করা
.বার বার খাবার গ্রহণ
.খাবারে রাখুন কার্বোহাইড্রেড
.বেশি ক্যালোরি গ্রহন
.সঠিক প্রোটিন গ্রহণ
.ড্রাই ফ্রুটস খাবেন
.টেনশনমুক্ত থাকুন
.পরিমিত ঘুমান
1,ব্যায়াম করা
শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করা খুবই জরুরি। অল্প বয়সী থেকে বয়স্ক– যে কেউ যদি প্রতিদিন ব্যায়াম করেন, তাহলে অবশ্যই উপকৃত হবেন। নিয়মিত ব্যায়াম শুধু শারীরিক নয়, মানসিক সুস্থতা এনে দেয়। এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যাদের বয়স ৬০-এর ওপরে, তারা যদি সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ মিনিট নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাহলে বছরে যে টাকা তিনি চিকিৎসার জন্য ব্যয় করেন, তা অনেকাংশে কমে আসে।
নিয়মিত ব্যায়ামের একাধিক উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হলো–
১. নিয়মিত ব্যায়াম হৃৎপিণ্ডের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যারা কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে ভুগছেন, তারা যদি প্রতিদিন ব্যায়াম করেন, তাহলে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি তিন ভাগের এক ভাগ কমে যায়।
২. নিয়মিত ব্যায়াম করলে মাংসপেশি, হাড় এবং অস্থিসন্ধি শক্ত হয়। মানবদেহে হাড়ের ডেনসিটি বেড়ে যায়; যা অস্টিওআর্থ্রাইটিস ও অস্টিওপোরোসিসসহ অস্থিসন্ধির বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমায়।
৩. নিয়মিত ব্যায়াম করলে অনেক ক্যালরি ক্ষয় হয়, যা স্বাস্থ্যসম্মত ওজন ধরে রাখে। ওজন ঠিক থাকলে অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা দূর করে। নিয়মিত ব্যায়াম করার পাশাপাশি আমাদের প্রতিদিনের খাওয়ার প্রতি যত্নশীল হতে হবে।
৪. নিয়মিত ব্যায়াম ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এর মধ্যে স্তন ক্যান্সার, মলাশয় ক্যান্সার অন্যতম।
৫. গোটা বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ব্যায়াম দুই ধরনের ডায়াবেটিক বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমায়। আপনি যদি ডায়াবেটিসের রোগী হন, তাহলে একটি ডায়েরি মেইনটেইন করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। প্রতিদিন আপনার সুগার লেভেল লিখে রাখুন। এভাবে নিয়মিত ব্যায়াম করলে দেখতে পাবেন আপনার রক্তের গ্লুকোজ লেভেলে কতটা পরিবর্তন এসেছে। [মোটা হওয়ার উপায়]
৬. প্রতিদিন ব্যায়াম করলে আমাদের শরীরে রক্ত চলাচল বাড়ে; যার ফলে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ে। এর ফলে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ রোগ প্রতিরোধ করে।
2,বার বার খাবার গ্রহণ
একসাথে বেশি পরিমাণ খাবার খেলে তা দেহে যেসব পরিবর্তন আনতে পারে তার মধ্যে একটি হলো আরো বেশি ক্ষুধা অনুভব করা। অবশ্য পাকস্থলীর আকার বাড়ে বলেই এমনটি হয় তা কিন্তু নয়।
আমি মোটামুটি আত্মবিশ্বাসী যে বেশি পরিমাণ খাবার খাওয়ার পর আমার কেমন লাগবে: ঝিমুনি ভাব, আসলেমি লাগা এবং অবশ্যই পেট পুরো ভর্তিভাব। কিন্তু আমি এটাও নিশ্চিত যে পরের দিন দুপুরের খাবারের সময় আমি অতিরিক্ত একটি রোস্ট খাওয়ার জায়গা ঠিকই করে নিবো।
যখন আপনি এটা ভাববেন তখন বেশ অবাকই লাগবে যে, বিশাল পরিমাণ খাবার খাওয়ার ঠিক পরের দিনই আপনি একদম আগের দিনের মতোই একই পরিমাণ খাবার আবার খেতে পারবেন। তার মানে প্রথম বারে কি আমাদের শিক্ষা হয়নি?
আসলে কোন কিছু খাওয়ার জন্য আপনি যে তাড়না অনুভব করেন, তা আপনার দেহের ভেতরে বেশ কিছু শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনের কারণে হয়।
3.খাবারে রাখুন কার্বোহাইড্রেড
কার্বোহাইড্রেট হলো চিনি , শ্বেতসার বা starch , তন্তু জাতীয় যা বিভিন্ন খাবারের মধ্যে পাওয়া যায় । রাসায়নিক গঠন অনুযায়ী কার্বোহাইড্রেটকে সহজ বা জটিল দুই ভাগে ভাগ করা যায় । যেমন চিনি হলো সহজ কার্বোহাইড্রেট যা প্রায় সব খাবার, ফল ,শাক সবজি , দুধ বা দুগ্ধজাতীয় খাবার , প্রক্রিয়াজাত খাবারের মধ্যে পাওয়া যায় আর জটিল কার্বোহাইড্রেট হলো শ্বেতসার ও তন্তু যা পাওয়া যায় ভাত , রুটি , শ্বেতসার বহুল শাক সবজি , শিম বা শুঁটি জাতীয় খাদ্যের মধ্যে । প্রতেক দিনের ক্যালরির প্রায় ৪৫ থেকে ৬৫ ভাগ আসা উচিত কার্বোহাইড্রেট থেকে । কার্বোহাইড্রেট থেকে আমরা এনার্জি বা ক্যালোরি পাই যা আমাদের কোষের শক্তি, দৈহিক তেজ, কর্মক্ষমতা,তাপ উত্পাদন ও চর্বি গঠন বাড়াতে সাহায্য করে ।এই জাতীয় খাবারই আমাদের দেহ গঠন এবং দেহ সংরক্ষণের প্রধান উপাদান । প্রতি ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট আমাদের ৪.১ ক্যালোরি দেয় । যখন আমরা কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খাই ,আমাদের শরীর কার্বোহাইড্রেট থেকে চিনি ও শ্বেতসার ভেঙ্গে শর্করা বা Glucose তৈরী করে যেটা রক্তের সাথে মিশে যায় আর তন্তু শরীর থেকে বাইরে বেড়িয়ে যায় হজম না হয়ে । বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে, যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লায়সেমিক ইনডেক্স বা Glycemic Index বেশি থাকে, সেসব রক্তে তাড়াতাড়ি মিশে গিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় । আর যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লায়সেমিক ইনডেক্স বা Glycemic Index কম বা মাঝারি থাকে তারা রক্তে তাড়াতাড়ি মিশে গিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে না ।
4.বেশি ক্যালোরি গ্রহন
একটি খাদ্য পণ্যে যত বেশি ক্যালোরি রয়েছে, আপনি এটি গ্রহণ করার থেকে তত বেশি শক্তি পেতে পারেন। এবং যখন আপনার ক্যালোরির পরিমাণ আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালোরির পরিসরকে ছাড়িয়ে যায়, তখন আপনার শরীর সেই অতিরিক্ত ক্যালোরিগুলিকে চর্বি হিসাবে জমা করে।
বিভিন্ন খাদ্য আইটেমের ক্যালোরি গণনা পরিবর্তিত হয়।
উচ্চতা, ওজন, বয়স, বিপাক, সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং শারীরিক সুস্থতার মতো বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে এই প্রশ্নের উত্তর ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পরিবর্তিত হবে। এক-আকার-ফিট-সব পদ্ধতি এখানে কাজ করে না। একটি উদাহরণ আপনাকে এটি বুঝতে সাহায্য করবে।
আপনি যদি ওজন কমাতে চান তবে আপনার শরীরের প্রয়োজনের তুলনায় আপনার ক্যালোরি খরচ 500 ক্যালোরি কম রাখা উচিত। এই অনুশীলন দীর্ঘমেয়াদে আপনার বর্তমান শরীরের ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করবে। আপনার দিনে যে ক্যালোরি খাওয়া উচিত তা পরিবর্তিত হয়।
5-সঠিক প্রোটিন গ্রহণ
অ্যামিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ প্রোটিন দেহের বিভিন্ন কাজে লাগে। যেমন- পেশির উন্নতি, ক্ষয় পূরণ, বিপাকীয় শক্তি বৃদ্ধি। চলুন জেনে নিই দৈনিক কতটুকু প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত-
‘দি ডায়েটারি গাইডলাইন্স ফর আমেরিকানস’ অনুযায়ী, প্রাপ্ত বয়স্ক নারীর জন্য প্রতিদিন ৪৬ গ্রাম ও প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের জন্য ৫৬ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে ব্যক্তি, বয়স, লিঙ্গ, কাজের পরিধি, সার্বিক স্বাস্থ্য ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে এই পরিমাণের তারতম্য হতে পারে।
যেমন-
গর্ভবতীর জন্য উল্লেখিত পরিমাণের চেয়ে বেশি প্রয়োজন। বৃদ্ধদের বেশি প্রোটিন গ্রহণ করতে হয় যাতে পেশি ক্ষয় রোধ করা যায়। খেলোয়াড়দের বেশি প্রোটিন গ্রহণ করার প্রয়োজন পড়ে।
জীবন ধারনের পদ্ধতির ওপর প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ
কাজের মাত্রার ওপর নির্ভর করে প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণে তারতম্য হয়।
বেশিরভাগ সময় বসে সময় কাটে, এমন মানুষের প্রতি কিলোগ্রাম দৈহিক ওজনের জন্য প্রায় ০.৮ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করতে বলা হয়।
অতিরিক্ত কার্যক্ষম ব্যক্তির ক্ষেত্রে
যারা শারীরিক কাজ বেশি করেন তাদের জন্য প্রস্তাবিত প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ হল- দেহের প্রতি কিলোগ্রাম ওজনের জন্য ১.২ থেকে ২ গ্রাম।
ওজন কমাতে প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ
সর্বোনিম্ন পরিমাণ: প্রতি পাউন্ড ওজনের জন্য অন্তত ০.৩৬ গ্রাম।
স্বাভাবিক পরিমাণ: প্রতি পাউন্ড ওজনের জন্য ০.৬ থেকে ০.৮ গ্রাম।
অতিরিক্ত পরিমাণ: প্রতি পাউন্ড ওজনের জন্য ০.৮ থেকে ১.২ গ্রাম।[মোটা হওয়ার উপায়]
7-ড্রাই ফ্রুটস খাবেন
‘ড্রাই ফ্রুটস’ সরাসরি কিংবা সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে যেভাবেই খাওয়া হোক না কেন পুষ্টি উপাদানের দিক থেকে কিছুই হারাবে না। তবে দিনে সর্বোচ্চ ৩০ গ্রাম পর্যন্ত খেতে পারবেন, যা হাতের তালুতে জায়গা হয়ে যায়।
তবে খেয়াল রাখতে হবে, ‘ড্রাই ফ্রুটস’য়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ফল থাকতে হবে, একই ফল থাকলে হবে না।
‘ড্রাই ফ্রুটস’য়ের ক্যালরি আর চিনির ঘনত্ব যেহেতু বেশি, তাই তা পরিমাণে অতিরিক্ত খেলে ওজন বাড়বে, পেটে গ্যাসের সমস্যা দেখা দেবে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেবে। আবার সেগুলোতে যদি লবণ মেশানো বাদাম থাকে তাহলে বাড়বে রক্তচাপ, দেখা দিতে পারে ডায়রিয়া কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্য।
‘ড্রাই ফ্রুটস’য়ের বিভিন্ন রকম ফল থাকে, যাদের ক্যালরির মাত্রা বিভিন্ন রকম।
যেমন ‘ড্রাই ফিগ’য়ের ক্যালরির মাত্রা এতই বেশি যে তা দিনে সর্বোচ্চ দুই থেকে তিনটি খাওয়াই আদর্শ। এর বেশি খেলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। আবার বাদাম খাওয়া ক্ষেত্রেও সাবধানতা প্রয়োজন।
8-টেনশনমুক্ত থাকুন
অসুখের হাত থেকে বাঁচতে হলে টেনশন থেকে মুক্ত থাকতেই হবে। টেনশন থেকে সহজেই মুক্ত থাকতে ৫টি বিষয় মেনে চলতে। এগুলো হলো-
১। মেডিটেশন: প্রতিদিন ধ্যান বা মেডিটেশনের অভ্যাস আপনাকে অনেকটাই টেনশনমুক্ত রাখার চেষ্টা করবে। চোখ বন্ধ করে কিছু সময় একান্ত মনে কোনো কিছু না ভেবে বসে থাকা আর দীর্ঘ শ্বাস প্রশ্বাস নেয়া দুশ্চিন্তা বা টেনশনকে অনেক দ্রুত কমাতে পারে।
২। বিশ্রাম: দ্রুত টেনশন বা দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে বিশ্রাম বা ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। দীর্ঘ সময় গভীর ঘুমের পর মানসিক চাপ অনেকটা কমে যায়। একই সঙ্গে নিজেকে লাগে আরও সতেজ ও প্রাণবন্ত।
৩। গান: দুশ্চিন্তার সময় কখনও দুঃখের গান বা সুর কখনও শুনতে যাবেন না। বরং শুনুন মন ভালো করে দেয়ার মতো সুরের গানগুলো। শুনতে পারেন ভালোবাসার গানও। এতে মনের উপর চাপ খুব সহজেই দূর হয়ে যায়।
৪। ব্যায়াম: খুব টেনশনের সময় হালকা কিছু শারীরিক কসরত বা ব্যায়াম করতে পারেন। নিয়মিত এ অভ্যাস অনেকটাই মনের চাপ কমিয়ে দেয় বলে মত মনোবিদদের।
৫। ডায়েট ও শখ: মন খারাপ আর দুশ্চিন্তায় ডুবে গেলে মনকে অন্যদিকে ঘোরাতে গল্পের বই পড়তে পারেন। কিংবা আপনার যা করতে ভালো লাগে সেটি করতে চেষ্টা করুন। টেনশন কমাতে পার্লার, শপিং কিংবা বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন।
9-পরিমিত ঘুমান
মোটা হওয়ার উপায় হলে ,সুস্থ ও ভালো জীবনযাপনের জন্য ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সঠিকভাবে ঘুম না হওয়ায় একজন মানুষের চাকরি ও যৌনজীবন থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রে বাজে প্রভাব পড়ে। ঘুমের সমস্যার কারণে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ক্যান্সারের মতো রোগও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি ঘুমজনিত স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগের কারণে মৃত্যু হতে পারেন বলে জানিয়েছেন তারা।
সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডে অফিসার্স ক্লাবের হাউজি রুমে অ্যাসোসিয়েশন অব সার্জনস ফর স্লিপ অ্যাপনিয়া বাংলাদেশ আয়োজিত ঘুম ও নাক ডাকাবিষয়ক সেমিনারে আলোচকরা এসব কথা বলেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন সংগঠনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা; মনিলাল আইচ লিটু। তিনি বলেন, স্লিপ অ্যাপনিয়ার চিকিৎসা নির্ভর করে এর প্রকার ও তীব্রতার ওপর। এটি অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া ও সেন্ট্রাল স্লিপ অ্যাপনিয়া আক্রমণের ওপর নির্ভর করে। মনে রাখবেন সেন্ট্রাল স্লিপ অ্যাপনিয়া ব্রেন বা মস্তিষ্কের কারণে হয়। এর মূল কারণ সাধারণত হার্ট ফেইলিওর, লিভার ফেইলিওর এবং এ ধরনের অ্যাপনিয়ার চিকিৎসার মানে ওইসব রোগের চিকিৎসা করা। তবে তার আগে অভ্যাসগত জীবনযাত্রার কিছু দিক পরিবর্তন করতে হবে। যেমন- শোয়ার স্টাইল পরিবর্তন করতে হবে। কারণ, চিত হয়ে শুয়ে থাকলে স্লিপ অ্যাপনিয়া বাড়ে। সে জন্য একপাশে কাত হয়ে শোয়ার অভ্যাস করুন এবং যদি সাইনাস বা ফুসফুসের ফ্লেমের কারণে নাক বন্ধ থাকে তাহলে যেদিক দিয়ে বন্ধ থাকে তার বিপরীত দিকে কাত হয়ে শোয়া ভালো। বালিশ দিয়ে ঘুমালেও খুব বেশি নরম বা ফোম জাতীয় তুলার বালিশ দিয়ে না শোয়া ভালো এবং বুকে জড়িয়ে ধরার বালিশ ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে- শোয়ার বালিশ চার ইঞ্চি উঁচু থাকা ভালো। ওজন কমানোর চেষ্টা করেন বা মেদ ভুঁড়ি বেশি থাকলে তা নিয়ন্ত্রিত করার চেষ্টা করতে হবে। মনে রাখতে হবে শরীরের ১০ ভাগ ওজন কমাতে পারলে ২৫ ভাগ স্লিপ অ্যাপনিয়া এমনিতেই কমে যায়।[মোটা হওয়ার উপায়]
প্রবন্ধে বলা হয়, এছাড়া অ্যালকোহল, ধূমপান, অতিরিক্ত চা-কফি পান থেকে বিরত থাকুন ও ঘুমের ওষুধ সেবন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে। টনসিলের প্রদাহ থাকলে তা যাতে রাতের বেলায় একটু স্থিতি হয়ে থাকে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম, যেমন নিয়মিত ব্যায়ামের মধ্যে হাঁটা, সাঁতার কাটা এবং সাইকেল চালানোই সবচেয়ে ভালো ব্যায়াম।
মোটা হওয়ার কার্যকরী উপায়
অতি তাড়াতাড়ি মোটা হওয়ার জন্য প্রথমে আমাদের বেশি পরিমাণে খাওয়া দাওয়া করতে হবে।
বেশি ক্যালোরি গ্রহণ: প্রতিদিনের নিয়মমাফিক ক্যালরি গ্রহণের পাশাপাশি ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম বেশি পরিমাণে ক্যালরি গ্রহণ করুন। ক্যালরিযুক্ত খাবার যেমন- মাংস, ডিম, দুধ ও মাখন ইত্যাদি।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: প্রতিদিনের খাবার তালিকা পরিমাণের একটু বেশি প্রোটিন যুক্ত করুন। প্রোটিনযুক্ত খাবারের মধ্যে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ এবং বিভিন্ন ফল ইত্যাদি।
প্রচুর কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট: পরিমাণ মতো চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। চর্বি মানুষের দেহ দ্রুত মোটা করতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে কার্বোহাইডেট ও চর্বিযুক্ত খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কার্বোহাইড্রেট ও চর্বিযুক্ত খাবার- ভাত, রুটি, বাদাম , তেল ইত্যাদি।
নিয়মিত খাবার: প্রতিদিনের সময় মেনটেন করে খাবার খান। আবার যখন খিদে লাগে তখনও খেতে পারেন।
. উপরোক্তার নিয়ম গুলো ফলো করলে সহজে মোটা হওয়া যায়। কেউ যদি মাত্র সাত দিনে মোটা হওয়ার উপায় জানতে চাই। তাহলে আমি বলব খাদ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে।
কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট: ভাত, রুটি, নাস্তা সহ এগুলা আমাদের শরীরের কার্বোহাইড্রেট বৃদ্ধি করে। দ্রুত মোটা হওয়ার জন্য আমাদের উচিত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধি করা। এবং তার সাথে ফ্যাট জাতীয় খাদ্য যেমন- দুধ, মাংস, তেল গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি করা।
সাধারণ খাবারের সাথে স্ন্যাক্স: স্নাক্স জাতীয় খাবার যেমন- মিল্ক বাটার, চকলেট ইত্যাদি সাধারণ খাবারের সাথে খাওয়া।
ওজন ট্রেনিং: সপ্তাহে তিন-চার দিন ধরে বিভিন্ন সাধারণ ভারি বস্তু উত্তোলন করার মাধ্যমে ওজন ট্রেনিং করতে পারেন। এতে শরীরের পেশি গঠনে সাহায্য করবে।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম: প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমান। কখনো ছয় ঘন্টার কম ঘুমানো উচিত নয়।
উপরোক্তা নিয়ম মেনে খাওয়া-দাওয়া এবং কার্যকলাপ করলে খুব দ্রুত ই সঠিকভাবে শরীরের ওজন এবং মোটা হওয়া যাবে।
খাবারের বৈচিত্র্য: একই রকমের খাবার না খেয়ে বিভিন্ন রকমের খাবার খাবেন। কারণ প্রতিটি খাবার শরীরের আলাদা আলাদা খয় পূরণ করে থাকে।
মনের যত্ন: মানসিক চাপ মুক্ত থাকবেন। সব সময় শারীর িক ব্যায়াম করবেন। মাঝে মাঝে ধ্যান করবেন।
অতিরিক্ত মাখন ও তেল: খাবারের সাথে অতিরিক্ত মাখানো তেল যুক্ত করবেন। যা খুব সহজে মোটা হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ
খাদ্যাভ্যাস পর্যবেক্ষণ: প্রতিদিন কি খাচ্ছেন তা নোট করুন। এবং পর্যবেক্ষণ করুন কোন খাবারটি খাওয়া উচিত।
উপরের নিয়ম কানুন গুলো মেনে চলতে পারলে খুব সহজেই মোটা হওয়া সম্ভব। এমনকি মাত্র সাত দিনেই এর ফলাফল পাওয়া যায়।